Friday, February 28, 2020

২৫ শে মার্চ ভেস্তে যায় মুজিব-ইয়াহিয়া-ভুট্টোর বৈঠক

যেদিন ভেস্তে যায় শেখ মুজিব-ইয়াহিয়া-ভুট্টোর বৈঠক এবং বাতিল হয় ২৫ মার্চ জাতীয় সম্মেলন-সে রাতেই পাকিস্তান হত্যা করে ঘুমন্ত বাঙ্গালী জাতিকে। ওটাই ছিল বঙ্গবন্ধু ভুট্টো ও ইয়াহিয়ার শেষ সমঝোতার সম্ভাবনাময় দ্বার।
১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ২৫ মার্চের জাতীয় সম্মেলন স্থগিত ঘোষণা করেন। জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা ও রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে মতৈক্য প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়ে তিনি জাতীয় সম্মেলন স্থগিত করেন।
১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ সকাল বেলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, পাকিস্তান পিপলস পার্টির প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো ও প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান প্রেসিডেন্টের বাসভবনে বৈঠকে বসেন।
ওই বৈঠক ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার ষষ্ঠ বৈঠক। ১ ঘণ্টা ২০ মিনিটের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে কোন ধরণের সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। এক পর্যায়ে বৈঠক স্থগিত হয়ে যায়।
বৈঠকের শুরুতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইয়াহিয়া খানকে প্রশ্ন করেন, তিনি আওয়ামী লীগের ঘোষণাপত্র পড়েছেন কি না? আর পড়লেও তার ঘোষণাপত্র পাকিস্তান সমর্থন করবে কি না? জবাবে ইয়াহিয়া খান বলেন, বঙ্গবন্ধু ও তার দলের ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের আগে পাকিস্তান পিপলস পার্টির সম্মতি প্রয়োজন রয়েছে।
ইয়াহিয়ার এমন জবাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, আপনি ভুট্টোকে বোঝানোর চেষ্টা করুন, যাতে সে দ্রুত আমাদের ঘোষণা মেনে নেয়। নয়তো পূর্ব পাকিস্তানের অবস্থা দ্রুতই খারাপ পরিস্থিতির দিকে যাবে। ওই বৈঠকের পর বঙ্গবন্ধু সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, তা সাত কোটি মানুষের মুক্তির জন্য আন্দোলন। আর চূড়ান্ত পরিণতি আসা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও তিনি ঘোষণা করেন।
এদিকে ভুট্টো ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, তার দল আওয়ামী লীগের দেওয়া খসড়া ঘোষণাপত্র যাচাই বাছাই করছে। শুধু তাই নয়, ওই সংবাদ সম্মেলনে ভুট্টো জানায়, আমরা শিগগিরই একটি মতৈক্যে পৌঁছাতে পারবো বলে আশা করছি। আর এর মাধ্যমেই অচলাবস্থার নিরসন ঘটবে। কিন্তু তা ঘটেনি ঘটেছে রক্তাক্ত বাঙ্গালীর লাশ দাফনের ঘটনা। যে কারনে স্বাধীনতা ঘোষণার প্রশ্ন এসে দাড়ায়।

No comments:

Post a Comment